• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দিনাজপুরের তাপদাহে লিচুর পুড়ছে মুকুল, ঝরছে গুটি 

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৪  

দিনাজপুরে অব্যাহত অনাবৃষ্টি আর তাপদাহে পুড়ে যাচ্ছে লিচুর মুকুল। সেইসঙ্গে ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আবহাওয়ার প্রতিকূল এ অবস্থা মোকাবিলা করে লিচু রক্ষায় চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের লিচু গাছগুলোতে এবার সমারোহ ঘটে ব্যাপক মুকুলের। চৈত্র মাসের শেষদিক থেকেই আসতে শুরু করে গুটি। কিন্তু অব্যাহত তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ে যাচ্ছে গাছের মুকুল, ঝরে পড়ছে নতুন গুটি। এতে প্রথম অবস্থায় গাছের মুকুল দেখে বেশ আশান্বিত হলেও এখন চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিনাজপুরের লিচু চাষিরা।  

বিরল উপজেলার মাধববাটী, সদর উপজেলার মাসিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা লিচু রক্ষায় বাগানে সেচ ও গাছের পরিচর্যা করছেন। কেউ কেউ লিচু রক্ষার জন্য গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। 

সদর উপজেলার মাসিমপুর গ্রামের লিচু চাষি আজিজ হোসেন জানান, তার বাগানে ছোটবড় মিলিয়ে শতাধিক লিচুর গাছ রয়েছে। প্রথম অবস্থায় প্রায় প্রতিটি গাছেই ব্যাপক মুকুল আসায় এবার লিচু নিয়ে বেশ লাভের স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু গুটি আসার মোক্ষম সময়ে তীব্র রোদ আর গরমের কারণে পুড়ে গেছে গাছের অনেক মুকুল এবং এখন ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি। এ অবস্থায় ফলন নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। 

এক লিচু চাষি জানান, মাদ্রাজি ও বোম্বে জাতের লিচু গাছে এবার ব্যাপক মুকুল আসে। বর্তমানে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বোম্বে লিচুর গাছে মোটামুটি ভালো গুটি থাকলেও মাদ্রাজি জাতের লিচুর গাছের বেশিরভাগ মুকুল রোদে পুড়ে গেছে।

বিরল উপজেলার মাধববাটী গ্রামের এক চাষি বলেন, লিচুকে কেন্দ্র করেই এ অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল। কিন্তু প্রকৃতির এই বিরূপ আচরণে এবার লিচুর ফলন নিয়ে শংকায় তারা। প্রতিকূল এই আবহাওয়ার কারণে এবার লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হবে।  

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নুরুজ্জামান জানান, জেলায় বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে লিচুর গাছ রয়েছে। লিচুগাছে এবার প্রচুর মুকুল আসার পরও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু মুকুল ঝরে যাচ্ছে। তারপরও এখন দানা পর্যায়ে চলে এসেছে। আমরা চাষি পর্যায়ে বলছি- এটা একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা যদি সঠিকভাবে সেচ দেয়, সঠিকভাবে ওষুধ প্রয়োগ করে তাহলে এই লিচুকে আমরা হারভেস্ট পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারব এবং আমরা পর্যাপ্ত ফলন পাবো। 

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, দিনাজপুরে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –